বাকেরগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি-
বরিশালের বাকেরগঞ্জে দুই শিশু শিক্ষার্থীর সামান্য ঝগড়ার জের ধরে বিদ্যালয় চলাকালীন লাইব্রেরী রুমে ঢুকে দুই শিশু শিক্ষার্থীকে বেধরক মারধর করে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় প্রতিবাদ করায় সহকারী শিক্ষিকা শামীমা ইয়াসমিনকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে।

সোমবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে ২টায় উপজেলার ২৭৫ নং সাহেবপুর মৃধাবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

আহত দুই শিশু শিক্ষার্থী হল রিফাত হাওলাদার (১১) ও জান্নাতি আক্তার (১০)। নির্যাতনের শিকার দুজন আপন ভাইবোন এবং তারা ওই বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।

নির্যাতনের শিকার শিশু শিক্ষার্থী রিফাত হাওলাদার অভিযোগ করে জানান, সোমবার স্কুলের মাঠে খেলাধুলার সময় ক্লাসের সহপাঠী জুবায়ের মোল্লার সাথে তার কথাকাটাকাটি হয়। বিষয়টি জুবায়ের তার দাদি পিয়ারা বেগমকে জানালে তিনি দুপুর দুইটার সময় তিনি প্রথমে বিদ্যালয়ের মাঠে গিয়ে রিফাতকে ধরে মারধর করেন। এ সময় তার বোন একই ক্লাসের জান্নাতি আক্তার প্রতিবাদ জানালে তাকেও মারধর করা হয়। তারা আত্মরক্ষার্থে বিদ্যালয়ের লাইব্রেরী রুমে শিক্ষকদের নিকট দৌঁড়ে যায়। উগ্র স্বভাবের পিয়ারা বেগম সেখানে গিয়েও শিক্ষকদের সামনে দুই শিশু শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শামীমা সুলতানা দুই শিশু শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনা স্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, পিয়ারা বেগমের হামলার শিকার হয়ে দুই শিশু শিক্ষার্থী রিফাত ও জান্নাতি লাইব্রেরী রুমে আশ্রয় নিলে সেখানেও পিয়ারা বেগম শিক্ষকদের সামনে হামলা চালিয়ে দুই শিশুকে মারতে মারতে আহত করেন। ওই সময় তিনি প্রতিবাদ করায় ঘটনার কিছু সময় পর তার পুত্র মিরাজ মোল্লা বিদ্যালয়ে গিয়ে তিনি কিভাবে ক্লাস করাবেন সেটা দেখে নেবে বলেও হুমকি দেয়। এ ঘটনায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলেও জানান।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তুলসী রাণী জানান, পিয়ারা বেগম নামের একজন অভিভাবক বিদ্যালয়ের লাইব্রেরী রুমে ঢুকে ৫ম শ্রেণীর দুই শিশু শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করেছে। যা মোটেই কাম্য নয়। তিনি বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন বলে জানান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত পিয়ারা বেগমের বাড়িতে গেলে তিনি কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
তবে তার পুত্র মিরাজ মোল্লা বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে তার সমাধান হয়ে গেছে। এজন্য তিনি নিজে ক্ষমা চেয়েছেন বলেও জানান।

অপরদিকে অভিযুক্ত পিয়ারা বেগমের পুত্র সিরাজ মোল্লা নিজেকে বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের নেতা পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদের কাছে জানতে যান তারা কার কথামতো সেখানে গিয়েছে। এনিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে তিনি সাংবাদিকদের হুমকি দেয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয় চলাকালীন ক্লাসরুমে ঢুকে শিশু শিক্ষার্থীদের মারধরের বিষয়টি দুঃখজনক। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে তিনি সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা রাবেয়া খানমকে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রয়োজনে শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।

পোস্টটি শেয়ার করুনঃ