প্রতিনিধি,

সাতক্ষীরা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি ও সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের সাবেক আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা আব্দুল খালেক মন্ডলের জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার(২১ জুলাই) আসরের নামাজের পর শিকড়ী ফুটবল মাঠে জানাজা নামাজে ইমামতি করেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম। এর আগে পুলিশ পাহারায় খুলনা থেকে মাও. আব্দুল খালেকের লাশ লাশবাহী গাড়ীতে করে বাড়িতে নেওয়া হয় এবং গোসল শেষে জানাজা নামাজ শেষে শিকড়ী বল্ডফিল্ডে আনা হয়। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেও জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীসহ কয়েক হাজার মুসল্লি জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। জানাজা নামাজের পূর্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের সাবেক আমির মোহাদ্দিস আব্দুল খালেক, জেলা জামায়াতের আমির মোহাদ্দিস রবিউল বাসার, সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমান, নায়েবে আমির শেখ নুরুল হুদা, শহিদুল ইসলাম মুকুল, সদর উপজেলা আমির মাওলানা শাহাদাত হোসেন, মাওলানা মেশাররফ হোসেন, কলারোয়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা কামারুজ্জামানসহ যশোর, খুলনা, বাগেরহাট থেকে আগত জামায়াতের নেতৃবৃন্দ। নিহতের জামাতা মাওলানা আব্দুল গফফার বলেন, সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে থাকা অবস্থায় গত ৭ জুলাই ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন তিনি। তখন তাকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সম্প্রতি অবস্থার অবনতি হলে তাকে খুলনায় স্থানান্তর করা হয়।বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে কারা হেফাজতে খুলনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। জানা যায়, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাঁচ ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যা ও বায়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার অভিযোগে সাতক্ষীরা ২ আসনের জামায়াতের সাবেক এমপি আব্দুল খালেক মন্ডলসহ নয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ২ জুলাই মামলা করেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শিমুলবাড়িয়া গ্রামের শহীদ রুস্তম আলী গাজীর ছেলে নজরুল ইসলাম গাজী। পরে মামলাটি আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। এরপর ২০১৫ সালের ১৬ জুন ভোরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার খলিলনগরের বাড়ি হতে খালেক মন্ডলকে গ্রেপ্তার করে সাতক্ষীরা থানার তৎকালীন এসআই আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম। সাতক্ষীরায় হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি মামলার মধ্যে শহীদ মোস্তফা গাজী হত্যা মামলায় এই জল্লাদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়ে জানতে ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট তদন্তে নামে, যা চলে ২০১৭ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। পরে ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেক মন্ডল, রোকনুজ্জামান, আব্দুল্লাহ আল বাকী এবং জহিরুল ইসলাম ওরফে টিক্কার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। সেখানে মোট ৩৩ জনকে সাক্ষী করা হয়েছিল যাদের মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্য শুনেছে ট্রাইব্যুনাল। ২০২২ সালের ২৪ মার্চ মানবতাবিরোধী অপরাধে সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের সাবেক আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল খালেক মন্ডলকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

পোস্টটি শেয়ার করুনঃ