অবৈধ পরকীয়া সম্পর্কের জের ধরে নিজের মেয়েকে হত্যা করেছে মা অভিযোগ এলাকাবাসীর
মোঃ আবু সাঈদ সরদার সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ
তালা উপজেলার আটারই গ্রামের শিল্পীর রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে চলছে এলাকায় আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়। মায়ের অবৈধ সম্পর্কের কারণে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে । সে রোগে মারা গেছে নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে এই রহস্যের জট নিয়ে চলছে গুঞ্জন। শিল্পীর মৃত্যুর পিছনে মা ফরিদার সাথে চাচার অবৈধ পরকীয়া সম্পর্কে দায়ী করছেন অনেকে। এই ঘটনার একের পর এক বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। শিল্পীর পিতা সুবহান সরদার বর্তমান দুবাই প্রবাসী। পারিবারিকভাবে শিল্পী (২৫) খাতুনের বিয়ে হয়েছে যশোর ঝিকরগাছায় শহিদুল ইসলামের সঙ্গে। শহিদুল ইসলাম বর্তমান মালয়েশিয়ার প্রবাসী। তাঁর ৫ বছর বয়সের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। মায়ের পরামর্শে শিল্পি তার স্বামীকে ডিভোর্সপত্র পাঠায় । কন্যা সন্তানকে নিয়ে শিল্পি বাপের বাড়িতে বসবাস করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলে , সুবাহান সরদার দীর্ঘদিন ধরে দুবাই থাকার সুবাদে স্ত্রী ফরিদা অবৈধ সম্পর্কে জড়ায় দেবর দেদারুলের সঙ্গে। শিল্পি তাদের অবৈধ পরকিয়া সম্পর্ক ও অবাদ মেলামেশা মেনে নিতে পারেনি । তাদের অবৈধ পরকীয়া সম্পর্কের বাঁধা হওয়ায় শিল্পীর একমাত্র মৃত্যুর কারণ বলে ধারণা করেন অনেকে । জুলাই- ৩ তারিখে রাতের কোনো এক সময় শিল্পীকে ভারী জিনিস দিয়ে আঘাত করে পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করেন অনেকেই । লাশ দাফনের সময় তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিলো বর্ণনা দেন একাধিক ব্যক্তি। সূত্রে আরো জানা যায় , ফরিদা ভোররাতে ঘরে তালা লাগিয়ে কাউকে না বলে নাতনিকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য যায় । কিন্তু নাতনি স্বীকারোক্তি দেয় নানির বাপের বাড়িতে গিয়েছিলো। মিথ্যা নাটক করে ফরিদা বাপের বাড়ির লোকজন নিয়ে আসে। দরজা খুলে ফরিদা বলে আমার মেয়ে অসুস্থার কারণে মারা গেছে। ডাক্তার বলেছে শিল্পী নাকি বেশি দিন বাঁচবেনা। বাপের বাড়ির লোকজন নিয়ে তড়িঘড়ি করে শিল্পীর দাফন কাফন সম্পন্ন করে। কিন্তু এলাকাবাসীর শেষ বারের মতো শিল্পীর মরা মুখটা দেখাতে ফরিদা বাঁধা দেয়। এতে করে স্থানীয় লোকজনের সন্দেহের সৃষ্টি হয়।
তারা আরো জানায়, শিল্পী রাতে অসুস্থ হয়েছে অথচ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাইনি । পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে তার মা কিভাবে বলে মেয়ে স্ট্রোক করে মারা গেছে ! গোপন সূত্রে আরো জানা যায়, চাচা জাহিদুল ফরিদাকে বলে তুই শিল্পীকে মেরে ফেলেছিস। সঙ্গে সঙ্গে ফরিদা জাহিদুলের পা ধরে কান্নাকাটি করে। বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানায়। জাহিদুলের আপন ভাই দিদারুল ফেঁসে যাবে বলে জাহিদুল বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে এবং মোটা অঙ্কের টাকা বানিজ্য করে । চাচা জাহিদুল ও মামা লিয়াকাত অনেকের মুখ বন্ধ করতে মোটা অঙকের টাকা ছড়াছড়ি করে। এলাকায় জনশ্রুতি আছে, শিল্পীর মা হিংস্র স্বভাবের ও ঝগড়াটে এবং তার আলাপ ব্যাবহার করুচিপূর্ণ । অনেকেরই ধারণা অবৈধ সম্পর্কের বাঁধাই শিল্পীর অকালমৃত্যু ।
এ বিষয়ে শিল্পীর মা ফরিদার সাথে মোবাইল ফোনে শিল্পীর মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে তিনি স্বাভাবিকভাবে কথা না বলে এলোমেলো ভাবে কথা বলেছে। ফরিদা বলেন,আমার মেয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলো । রাতে মেয়ে অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাননি কেন? তখন ফরিদা বলেন , হাসপাতালে নিয়ে যাব কাউকে পায়নি। ঘরে তালা লাগিয়ে ভোররাতে নাতনিকে নিয়ে বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
শিল্পের অকাল মৃত্যুকে এলাকাবাসী মেনে নিতে পারেনি। তারা জানায়,শিল্পী সহজ সরল প্রকৃতির মেয়ে ছিলো । সে সুস্থ্য এবং স্বাভাবিক ছিলো । এলাকাবাসীর প্রশ্ন ? শিল্পী স্বাভাবিকভাবে মারা গেছে নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে ! এলাকার সচেতন মহল শিল্পীর রহস্যজনক মৃত্যুর বিষয়টি পুলিশ প্রশাসন ও জনাব এসপি মহোদ্বয়কে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে তালা সদর থানার ওসির সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমাদের কাছে বিষয়টি নিয়ে কেউ অভিযোগ করিনি।এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানিনা। কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে করা হবে ।