আশাশুনির ১০৮ টি দূর্গাপূজা মন্দিরে প্রতিমা তৈরী ও মন্ডপের সাজসজ্জার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে
লিংকন আসলাম,আশাশুনি প্রতিনিধিঃ আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ১০৮টি পূজা মন্ডপে পূজার আয়োজনের শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি চলছে উৎসব মুখর পরিবেশে। প্রতিমা তৈরী ও মন্দিরের সাজসজ্জার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী ২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে এ বছর পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। ২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠীতে অনুষ্ঠিত হবে দূর্গাদেবীর ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠী বিহিত পূজা এবং সায়ংকালে দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস। ২১ অক্টোবর মহাসপ্তমীতে নবপ্রত্রিকা প্রবেশ, সপ্তমী বিহিত পূজা এবং দেবীর ঘোটকে আগমন। ২২ অক্টোবর মহাষ্ঠমীতে দূর্গা দেবীর অষ্টমী বিহিত পূজা। ২৩ অক্টোবর মহানবমীতে বিহিত পূজা এবং ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে বিহিত পূজা ও বিসর্জন, বিজয়া দশমী কৃত্য এবং দেবীর ঘোটকে গমন এর মধ্য দিয়ে এবছরের শারদীয় দূর্গা পূজা শেষ হবে। হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব হিসেবে দূর্গোৎসব বিবেচিত হলেও বর্তমানে তা বাঙ্গালী উৎসবে পরিনত হয়েছে। উৎসব মুখর পরিবেশ সাতক্ষীরার অন্যান্য স্থানের মত আশাশুনিতেও শিল্পের হাতের নকশায় এবং রং তুলির ছোঁয়ায় তৈরী হচ্ছে দেবী দূর্গার প্রতিমা। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রনজিৎ কুমার বৈদ্য জানান, প্রতি বছরের মতো এ বছরেও আশাশুনি উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের সর্বমোট ১০৮টি মন্ডপে শারদীয় দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। যার মধ্যে আশাশুনি সদর ইউনিয়নে ১১টি, শোভনালীতে ৬টি, কাদাকাটিতে ১৬টি, দরগাহপুরে ৯টি, কুল্যায় ১১টি, শ্রীউলায় ৮টি, বুধহাটায় ৫টি, খাজরায় ১৪টি, আনুলিয়ায় ৫টি ও বড়দলে ২১টি মন্ডপে এ পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে দেবী দূর্গার আগমনী বার্তায় বাঙ্গালী হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে উৎসবের আমেজ বইতে শুরু করেছে। সকল পূজা মন্দিরগুলোতে চলছে প্রতীমা নির্মাণ ও মন্দিরের সাজসজ্জার কাজ। পরবর্তীতে রং তুলির ছোঁয়ায় দশভুজা ষষ্ঠীতে পাবে জীবন্ত রূপ। দেবী সেজে উঠবে অপরূপ সাজে। শঙ্খ, উলুধ্বনি আর মঙ্গল সঙ্গীতে দেবী দূর্গাকে বরণ করে নেবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। জাতির মঙ্গল কামনায় সব অশুভ শক্তি বিনাশে এ বছর ১৪ অক্টোবর (শনিবার) মহালয়ার মাধ্যমে দেবী দূর্গা শ্বশুরালয় থেকে ঘোটকে করে পিতৃগৃহে আগমন করবেন। আসুরিক শক্তির বিনাশ আর পার্থিব শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি লাভের জন্য হিন্দু সম্প্রদায় যুগ যুগ ধরে মা দূর্গার আরাধনা করে আসছেন। আশাশুনি উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে পূজা উপলক্ষে সকল পূজা মন্দিরে সিসি ক্যামেরা ও চার্জিং এলইডি লাইট স্থাপন, আনসার ও পুলিশ সদস্য মোতায়েন করাসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত এবং ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। এবার পূজা উপলক্ষে মহাঅষ্টমীতে বিকালে কাদাকাটি হলদেপোতা নদীতে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা, নবমীতে পুইজালা (বিলবকচর) এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা, দশমীতে বিকালে মহিষাডাঙ্গা নদীতে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতাসহ বিজয়া দশমী উপলক্ষে কাদাকাটির টেংরাখালি আদর্শ শিক্ষা নিকেতন মাঠে ও বড়দলের বুড়িয়ায় আড়ম মেলা, বিভিন্ন মন্ডপে যাত্রাপালা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানসমূহ খুব জাকজমকপূর্ণভাবে পালন করা হবে বলে জানাগেছে। এদিকে, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল জনসাধারণের সহযোগিতায় শারদীয় দূর্গাপূজা সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন উপজেলাবাসী।