মোঃ আবু সাঈদ সরদার সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার আটারই পল্লীতে রহস্যজনক মৃত্যু পর ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করছে তার পরিবার । দাফনের সময়ে লাশের গলায় ক্ষত দাগ ও রক্তক্ষরণ থাকায় তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করেন। এবং হত্যা কারী দের আইনের আওতায় আনাতে গ্রাম বাসি মানববন্ধন করেছে। শনিবার (৫ আগষ্ট) সকাল ১০ টা সময় উপজেলা খেজুর বুনিয়া বাজারে এই মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় শতশত নারী পুরুষ শিক্ষক সহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষ এই মানবন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। মানবন্ধনে বক্তারা বলেন শিল্পী আক্তারের মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না।তার গলায় একটি দাগ ও পেছনের দিকে ঘাড়ের উপরে জখমের চিহ্ন ছিলো যা আমরা সকলে দেখতে পাই। এই মৃত্যু কোন প্রকার ময়নাতদন্ত ছাড়ায় কাফন দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করা বিভিন্ন নারী পুরুষ তাদের দাবি শিল্পী কে হত্যা করা হয়েছে এই হত্যার সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি দেওয়া হয়, এমনটা দাবি করেছেন প্রশাসনের কাছে।

সুত্র মতে তালা উপজেলার সদরের আটারই গ্রামের সুবান আলী সরদারের স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে শিল্পী আক্তার(২৩) গত মাসের ৩ রা জুলাই গভীর রাতে মৃত্যু বরণ করেন। পারিবারিক ভাবে জানানো হয় তিনি দীর্ঘদিন যাবত মারাত্মক অসুস্থ ছিলো সেই অসুস্থতার কারণে মারা গেছে। মৃত শিল্পী খাতুনের লাশের পাশে তার মা ফরিদা বেগম বসে ছিলো কাউকে লাশ দেখতে দেয়নি। মৃতদেহটি কাউকে না দেখতে দেওয়াই সাধারণ জনগণের মাঝে মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে ধ্রব্যজালের সৃষ্টি হয়। মৃতদেহটি গোসলের সময় সেখানে থাকা মহিলাদের নজরে আসে মৃত্যু দেহের গলায় কোন কিছুর প্যাঁচানো দাগ এবং ঘাড়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এ বিষয়টি উপস্থিত সর্বসাধারণের জানানোর পর। শিল্পীর চাচা হায়দার আলী(৪৮) ধারনা করেন মৃত্যুর সময় আজরাইল যখন জান নিতে আসে তখন ধস্তা ধস্তি করতে গিয়ে এই ধরনের জখম হয়েছে। এমন ঘটনার পরও এই মৃতদেহটি কোনরকম ময়নাতদন্ত ছাড়াই তড়িঘড়ি করে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আর এই দাফনের পর বেরিয়ে এসেছে আসল থোলের বিড়াল। স্থানীয় এলাকাবাসী আ: হালিম শেখ, মো:হাফিজুর রহমান, মো: মুজাহিদ,হাবিবুর রহমান, মো: শিমুল ইসলাম, মিন্টু সরদার,মো: ফারুক হোসেন, সাইফুল, রনজিত, আনিস সহ স্থানীয় সচেতন মহল জানায় , শিল্পীর পিতা জীবিকার তাগিদে দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে আছেন। যার কারনে শিল্পী চাচার সঙ্গে শিল্পীর মায়ের একটি পরকীয়া সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে। মা এবং চাচার এমন জঘন্য স্বেচ্ছাচারিতা খবর মেয়ে বুঝতে পারে। এ নিয়ে বাড়িতে শুরু হয় অশান্তি । মা এবং চাচাকে এমন জঘন্য ঘটনাটি বাধা দেওয়ায় তাদের অবৈধ প্রেমের রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলতে মেয়েকে খুনের ছক কষে। এবং গভীর রাতে শিল্পীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর সকলকে জানানো হয়েছে শিল্পী স্ট্রোকজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন এবং খুব তড়িঘড়ি করে লাশটি দাফন সম্পন্ন করেন। স্থানীয়রা আরো জানান, শিল্পীর একটি সন্তান রয়েছে নাম মারজিয়া ইসলাম (৫) এই বাচ্চাটির ভবিষ্যৎ কোথায় ?
এছাড়া শিল্পীর চাচা হায়দার আলী জানান , আমি ও ভাবি এলাকার বা পাশের লোকজনকে না জানিয়ে ভাবীর বাপের বাড়ির লোকজন ডেকে এনে তড়িঘড়ি করে লাশ দাফন করি। এলাকার ইউপি সদস্য,ইউপি চেয়ারম্যান কিংবা থানায় সংবাদ দিয়ে লাশ দাফন করেছেন কিনা জানতে চাইলে হায়দার আলী জানান, আমরা কাউকে জানায়নি। না জানিয়ে লাশ দাফন করেছি। শিল্পীর রহস্যজক মৃত্যুর বিষয়টি এলাকাবাসী স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেনি মর্মে গণস্বাক্ষর করে তালা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে । কিন্তু থানা প্রশাসন বিষয়টি আমলে না নিয়ে নীরব ভূমিকা পালন করেন। পরবর্তীতে এলাকাবাসী গণ স্বাক্ষর করে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এসপি সাহেব অভিযোগটি বর্তমানে তালা সার্কেল এসপির নিকট তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেছেন।
মানববন্ধনে শিল্পীর শিক্ষক নাসির হোসেন সোহাগ ও স্থানীয় বিভিন্ন নারী পুরুষের দাবি শিল্পীকে হত্যা করা হয়েছে । এই হত্যার সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি দেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান।
এ বিষয়ে তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি চৌধুরী রেজাউল করিম জানান এমন একটি মানববন্ধনের কথা শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে থানায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ করেনি।

পোস্টটি শেয়ার করুনঃ