মোঃ জাহিদ হোসেন, দিনাজপুর প্রতিনিধি ॥
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সুদীর্ঘ ৫৩ বছর ধরে নারীর মানবাধিকার রক্ষা ও সমতা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে যাচ্ছে সংগঠনটি। এরই ধারাবাহিকতায় ‘‘সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য প্রয়োজন স্বেচ্ছাসেবা, যৌথ নেতৃত্ব, অসাম্প্রদায়িকতা ও তরুণ সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততা’’ এই শ্লোনকে সামনে রেখে সাংগঠনিক পক্ষ-২০২৩ এর সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাংগঠনিক পক্ষ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন পাড়া, ইউনিয়ন ও উপজেলা শাখায় কর্মীসভা, সাংগঠনিক সফর, সাংগঠনিক প্রশিক্ষণ, পেশাজীবী নারী ও পুরুষদের সাথে মতবিনিময় সভা, রচনা প্রতিযোগিতাসহ অন্যান্য কর্মসূচী গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে।
৪ অক্টোবর (বুধবার) সংগঠনের কার্যালয়ে সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ দিনাজপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি মাহাবুবা খাতুন। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারা সানু। তিনি বলেন, সংগঠনের দক্ষ ও সচেতন কর্মী একটা সংগঠনের শক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। নারীর সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে সৃজনশীলতার বহিপ্রকাশ ঘটানো খুব সহজ নয়। এ ক্ষেত্রে সাংগঠনিক পক্ষের কর্মসূচী এবং প্রশিক্ষণ হতে পারে অনেক বেশী সহায়ক। এ ব্যাপারে সকল পাড়া ও উপজেলা কমিটির সদস্যদের আগ্রহী হয়ে উঠতে হবে। নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সংগঠক হয়ে উঠবার আহবান জানান তিনি।
এছাড়াও সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ, চাকুরিজীবী ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা নারী সমাজ। আবার নারী ও শিশুর প্রতি উত্ত্যকরণ, যৌণ নিপীড়, ধর্ষণ, হত্যাসহ লোমহর্ষক, বর্বর নির্যাতন মহামারী আকার ধারণ করেছে। এসব ঘটনা আমাদের বিবেককে স্তম্ভিত করে দিচ্ছে। সমাজ ও রাষ্ট্রের সার্বিক কল্যাণ ও সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতিনিধি তরুণরা। আর এই তরুণরাই বেছে নিচ্ছে নৈতিক অবক্ষয়ের পথ। তরুণদের নৈতিক চেতনা ও মূল্যবোধ বিকাশের জন্য প্রয়োজন সচেতন পদক্ষেপ, যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত, ন্যায় বিচারের নিশ্চয়তা, নারী-পুরুষের সমতার সংস্কৃতি এবং যথোপযুক্ত শিক্ষার সুযোগ। নারীদের ইতিবাচক অর্জন থাকা সত্ত্বেও আজকে ঘরে-বাহিরে কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকল ক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তাহীনতায় থাকতে হয়। এ ধরনের সহিংসতা নির্মূলে সরকার, স্থানীয় প্রশাসন, নাগরিক সমাজ আন্তরিক উদ্যোগী হবেন। নারী-পুরুষের বৈষম্যমুক্ত, মানবিক, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে আমাদের একতাবদ্ধ হতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে প্রত্যেক সংগঠককে মানবিক মানুষ হিসেবে সংগঠনকে শক্তিশালী করে তোলার আহবান জানান বক্তারা।
সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক রুবিনা আকতার এর সঞ্চালনায় সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি মিনতি ঘোষ, সুমিত্রা বেসরা, প্রশিক্ষন গবেষণা ও পাঠাগার সম্পাদক রুবি আফরোজ, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক শাহনাজ পারভীন, প্রচার সম্পাদক জেসমিন আরা, পরিবেশ সম্পাদক মওদুদা বেগম, সদস্য রোকসানা বিলকিস, অনামিকা পান্ডে, শুক্লা কুন্ডু, রেহেনা বেগম, গোলেনুর বেগম, জেলা ও পাড়া কমিটির নেতৃবৃন্দ।

পোস্টটি শেয়ার করুনঃ