নাটোরে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী,ধর্ষনে অন্তঃসত্ত্বা সেপ্টেম্বরে অপারেশন
ওমর ফারুক খান নাটোর প্রতিনিধিঃ
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় ধর্ষণের ঘটনায় ১০ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া এক শিশু। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তার সিজারিয়ান অপারেশনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, ধর্ষণের ঘটনায় অন্তঃসত্ত্বা হয়। ওই ঘটনায় মামলা করা হলেও এখনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
অভিযুক্ত জাহিদুল খাঁ (৫৫) গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের দক্ষিণ নাড়িবাড়ি গ্রামের কালু খাঁর ছেলে। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে।
ভুক্তভোগী শিশুর দাদি ও মামলার বাদী জানান, তার তিন ছেলের মধ্যে ছোট ছেলের ঘরের ওই নাতনি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। তার প্রকৃত বয়স ১২-১৩ বছর। মেয়ের বাবা-মা পৃথক সংসার করায় ওই নাতনি তার কাছেই থাকে। তিনি মাঠে কাজ করে সংসার চালান।
তিনি জানান, অভিযুক্ত জাহিদুল খাঁ প্রতিবেশী দাদা হয়। সে প্রায়ই তার তার সঙ্গে কটু কথা বলে। বিষয়টি জানতে পেরে শিশুর দাদি ওই প্রতিবেশীকে বকাঝকা করে তার নাতনির সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করেন। ওই ঘটনার কিছুদিন পর গত বছরের নভেম্বর মাসে তাকে ধর্ষণ করে। এরপর কাউকে বলে দেয়, তাহলে সে তাকে জবাই করবে- এমন ভয় দেখায়।
দাদি আরও জানান, ঘটনার প্রায় ছয় মাস পর শরীরের নানা পরিবর্তনে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে বিষয়টি খুলে বলে। এরপর আলট্রাসনোগ্রাফি করে তার অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গত ১৮ জুন থানায় মামলা দায়ের করেন। এখন তার নাতনি সন্তানসম্ভবা। মামলার বেশ কিছুদিন কেটে গেলেও আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোজাহিদুল ইসলাম জানান, আল্ট্রাসনো রিপোর্ট অনুযায়ী ৮ সেপ্টেম্বর সন্তান প্রসবের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে শারীরিক অবস্থাসহ পরবর্তী নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যা এড়াতে তার সিজারিয়ানের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
মামলার আইও এসআই আবুল কালাম জানান, মেয়েটি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। ঘটনার পর থেকে পলাতক থাকায় আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
গুরুদাসপুর থানার ওসি মনোয়ারুজ্জামান জানান, দ্রুত ওই আসামিকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায় জানান, বিষয়টি দুঃখজনক। আসামিকে দ্রুত গ্রেফতারে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অন্তঃসত্ত্বা শিশুটির সিজারিয়ান খরচসহ চিকিৎসা সংক্রান্ত দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এখন থেকে সন্তান প্রসব পরবর্তী মেয়েটিকে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবারও উপজেলা প্রশাসন সরবরাহ করছে।