প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরা সদরের লাবসা ইউনিয়নের বিসিআইসির ৩০ বস্তা এমওপি সার পাচারের অভিযোগ উঠেছে মেসার্স অন্তরা ট্রেডার্সেও বিরুদ্ধে। শনিবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ১১ টার দিকে সদরের কদমতলা বাজারে অবস্থিত অন্তরা ট্রেডার্সের গোডাউন থেকে ভ্যান যোগে বাঁশদহা ইউনিয়নের বাশদহা বাজারের মেসার্স রনি এন্টারপ্রাইজের নামে পাচার করে। পরে স্থানীয়রা সাতক্ষীরা সদও উপজেলা কৃৃষি কর্মকর্তাকে জানালে তার নির্দেশে কদমতলায় অন্তরা ট্রেডার্সে এসে পাচারকৃত ৩০ বস্তা এমওপি সার উদ্ধার করেন লাবসা ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনিসুর রহমান।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ইউনিয়ন ভিত্তিক ১ টি করে বিসিআইসি সার ডিলিয়ার নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগকৃত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তার ইউনিয়নের কৃষকদের মাঝে সরকার নিধারিত মূল্যে সার বিক্রয় করে। কিন্তু অন্তরা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী এস এম শাহারিয়াজ হোসেন অধিক মুনাফা লাভের আশায় প্রতিনিয়ত জেলার ও উপজেলার অন্যান্য এলাকায় সার বিক্রয় করেন। ফলে লাবসা ইউনিয়নে কৃত্রিম স্যারের সংকট দেখা দেয় এবং পরবর্তীতে সরকারি মূল্যে সার পাননা লাবসা ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের কৃষকরা। ফলে চাষের প্রয়োজনে চড়া মূল্যে খুচরা সার বিক্রেতাদের কাছ থেকে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা। এছাড়া দীর্ঘদিন লাবসা ইউনিয়নের ডিলার পৌরসভায় যেয়ে ব্যবসা করলেও কিছুই বলেননা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনিসুর রহমান। ওই কৃষি কর্মকর্তার যোগসাজসে মেসার্স অন্তরা ট্রোডার্স লাবসা ইউনিয়নের স্যার অন্য ইউনিয়নে পাচার করেন।
লাবসা ইউনিয়নের কৃষক রেজাউল, শহিদুল, আবেদার বলেন, লাবসার সার ডিলার যদি সাতক্ষীরা পৌর এলাকার রসুলপুরে অফিসের কর্যক্রম চালান। স্যার লাগলে পৌরসভা এলাকায় যেতে হয় আমাদের। আমাদের এলাকার প্রকৃত কৃষকরা সার পাননা। পায় অন্য এলাকার মানুষ। কৃষি ফসলে আমরা প্রতিনিয়ত লস খাচ্ছি। আমরা মেসার্স অন্তরা ট্রেডার্স এর লাইসেন্স বাতিল কওে আমাদেও ইউনিয়নের গোডাউন আছে এমন মানুষকে ডিলারশিপ দেওয়ার দাবী জানাচ্ছি। এছাড়া কৃষিকর্মকর্তা আনিসুর রহমানকে বদলীর দাবী জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে লাবসা ইউনিয়ন বিসিআইসি সার ডিলার মেসার্স অন্তরা ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী এস এম শাহারিয়াজ হোসেন সার পাচারের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বাঁশদহা, ঝাউডাঙ্গাসহ অন্য ইউনিয়নের ডিলারদের সারের সংকট দেখা দিলে আমার কাছ থেকে নিয়ে যায়। আমারও সারের সংকট দেখা দিলে আমিও নিয়ে আসি। আজকের ওই ৫০ ওকেজির ৩০ বস্তা সার বাঁশদহা ইউনিয়ন বিসিআইসি সার ডিলারের কাছে পাঠিয়েছি। সারের আদান প্রদানের বিষয়টি কৃষিকর্মকর্তারা জানেন। তবে সমস্যা হলে ওই ৩০ বস্তা সার ফেরত নিয়ে আসবো।
লাবসা ইউনিয়ন উপ-সহকারী কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, আমি পটাশিয়াম সার এর ৩০ বস্তা উদ্ধার করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানে ঢুকিয়ে দিয়েছি।
এক ইউনিয়নের সার অন্য ইউনিয়নে পাচার, প্রেরণ বা বিক্রয়ের সুযোগ নেই জানিয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মনির হোসেন বলেন, আমি অফিসিয়াল কাজে বাহিরে আছি তবে বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপনাকে জানাবো।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফতেমা তুজ জোহরা বলেন, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পোস্টটি শেয়ার করুনঃ