শীতের আগমনে খেজুর রসের প্রস্তুতি: চুয়াডাঙ্গায় ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা


শীতের আগমনে খেজুর রসের প্রস্তুতি: চুয়াডাঙ্গায় ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা
মোঃ মিনারুল ইসলাম
চুুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি
শীত এখনও পুরোপুরি আসেনি, কিন্তু শিশির ভেজা ঘাস ও কুয়াশাচ্ছন্ন প্রভাত জানিয়ে দিচ্ছে আগমনের বার্তা।
এই সময়ে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন অঞ্চলে খেজুর গাছিরা আগেভাগেই নেমে পড়েছে খেজুর গাছ প্রস্তুতের কাজে। কোমরে ডোঙা বেঁধে, হাতে ধারালো দা নিয়ে নিপুণ দক্ষতায় গাছ চাঁচছে তারা
চিরাচরিত বাংলার শীতের অনুষঙ্গ খেজুর রস, গুড় ও পাটালি। সেই সুস্বাদু রস পেতে হলে সময় থাকতে থাকতে গাছ প্রস্তুত করতে হয়।
তাই চুয়াডাঙ্গা জেলার চুুয়াডাঙ্গা সদর, আলমডাঙ্গা, দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলার গ্রামগুলোতে এখন খেজুর গাছিরা দিনভর কাজ করছেন।
কেউ গাছ তুলছেন,
কেউ পরিচর্যা করছেন, কেউবা গাছের সোনালি অংশ চাঁচ দিচ্ছেন। কয়েক সপ্তাহ পরেই এসব গাছে নলি বসিয়ে রস সংগ্রহ শুরু হবে।
প্রত্যাশা করা হচ্ছে, আগাম রস সংগ্রহ করতে পারলে রস, গুড় ও পাটালি বেশি দামে বিক্রি করে ভালো লাভ করতে পারবেন গাছিরা ও গাছের মালিকরা।
খেজুরের রস দিয়ে তৈরি নলেন গুড়, ঝোলা গুড়, দানা গুড় ও পাটালির চাহিদা গ্রামবাংলায় বরাবরই বেশি। শীত যত বাড়বে, রসের মিষ্টতাও তত বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গাছিরা জানাচ্ছেন, কাকডাকা ভোরে শুরু হবে রস সংগ্রহের কাজ, আর সন্ধ্যায় চলবে গাছ পরিচর্যা। এই ঐতিহ্যবাহী পেশা এখন নানা প্রতিকূলতায় অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে আছে।
জলবায়ু পরিবর্তন, নগরায়ন ও খেজুর গাছ রক্ষায় অনীহার কারণে অনেক গ্রামেই হারিয়ে যাচ্ছে এই ঐতিহ্য।
আগে যে জায়গাগুলোতে খেজুর গাছ ছিল সারি সারি, এখন সেখানে ফাঁকা পড়ে আছে জমি।
খেজুর গাছ শুধু রস বা গুড়ের উৎসই নয়, বরং বাংলার কৃষি সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও লোকজ জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
খেজুর পাতাও ব্যবহৃত হয় জ্বালানি ও অন্যান্য কাজে। চুয়াডাঙ্গায় এবার সময়মতো শীত পড়ায় আগেভাগেই শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। গাছিরা বলছেন, যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে, তবে এ বছর খেজুর রসের মৌসুম হবে বেশ সফল এবং লাভজনক।