নড়াইলে কৃষকের আউশ ধান ঘরে তোলা নিয়ে শরতের প্রকৃতিতে
![](https://dainik71bangla.com/wp-content/uploads/2023/09/received_2094078530942414.jpeg)
![](https://dainik71bangla.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:
নড়াইলে কৃষকের আউশ ধান ঘরে তোলা নিয়ে শরতের প্রকৃতিতে।
মাঠে মাঠে সোনালি পাকা ধানের হাতছানি, উৎসবের আমেজে আশার ফসল কাটতে ব্যস্ত চাষিরা, ডিঙি বোঝাই করে কাটা ধান নিয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফিরছেন কৃষকরা। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান,
নড়াইলে কৃষকের আউশ ধান ঘরে তোলা নিয়ে শরতের প্রকৃতিতে এই নৈসর্গিক দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে।
চাষিরা জানান, মাটি, আবহাওয়াসহ চাষের অনুকূল নানা পারিপার্শ্বিকতায় জেলার অপেক্ষাকৃত নিম্নাঞ্চলবর্তী বিলগুলোতে চাষিরা আউশ ধানের আবাদ করে থাকেন। আউশের নানা দেশি জাতের মধ্যে রাতুল ধান অন্যতম। পরবর্তী সময়ে আবহাওয়া সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে ক্রমাগত ফলন বিপর্যয়ের কবলে নড়াইলের ঐতিহ্যবাহী এ জাতটি হারিয়ে যেতে বসে।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চাষের নানা অনুকূল পরিবেশের ফলে জনপ্রিয় এ ধান পুনরায় চাষে ফেরাতে পেরে খুশি চাষিরা। প্রতিকূল নানা পারিপার্শ্বিকতায় এ অঞ্চলের চাষিরা আউশ ধান বোনা ছেড়ে দেয়ায় চিরায়ত বাংলার শরতের এই ছবি নড়াইলের প্রকৃতি থেকে এক সময় হারিয়ে গিয়েছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতসহ চাষ উপযোগী অনুকূল আবহাওয়ায় চাষিরা নবোদ্যমে লাভজনক দেশি আউশ ধান আবাদ শুরু করে। এতে প্রকৃতি আবারও ফিরেছে স্বমহিমায়। দেশি আউশ চাষে ব্যাপক লাভের মুখ দেখছেন কৃষক।
সরেজমিন লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলার বিভিন্ন বিলে গিয়ে দেখা গেছে, বর্তমানে ধান কাটার ভরা মৌসুম। দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠজুড়ে আউশ ধানে পাক ধরায় ফসল কাটতে ব্যস্ত চাষিরা। কোমর পর্যন্ত জলে নেমে হাসির সঙ্গে নানা আলাপচারিতায় চলছে এ ধান কাটা। একদিকে চলছে ধান কাটা, অন্য দিকে ডিঙি বোঝাই করে ধান নেয়া হচ্ছে বাড়িতে। দক্ষ চাষির লগির সুনিপুণ খোঁচায় ধানের ডিঙির সঙ্গে তরতরিয়ে অভীষ্ট গন্তব্যে বাধাহীন এগিয়ে চলে চাষিদের সুখস্বপ্ন।
কালিয়া উপজেলার বিষ্ণপুর গ্রামের চাষি ওয়াদুদ মিয়া জানান, বোনা রাতুল আউশ ধান আবাদে বিঘাপ্রতি (স্থানীয় বিঘা=৪৮ শতাংশ) ২০০০ হাজার টাকা খরচে প্রায় ২০ মণ ফলন পাওয়া যায়।
লোহাগড়া উপজেলাধীন লক্ষ্মীপাশা ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মানছুরুল হক সুমন বলেন, সুস্বাদু রাতুল আউশ প্রাকৃতিক সেচেই ফলানো সম্ভব, বাড়তি সার-কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না বললেই চলে। এ ছাড়া অন্যান্য ধান কেটে পরবর্তী ফসলের জন্য জমি পরিষ্কারে ব্যাপক খরচ গুনতে হলেও রাতুলের গোড়া পচে জমিতে মিশে গিয়ে জমি উর্বর করে তোলে।
কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, নড়াইলে এবার মোট ৯ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ হয়েছে, এর মধ্যে রাতুলসহ স্থানীয় জাতের আউশের আবাদ হয়েছে সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে।
উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে।