মােঃ জাহিদ হোসেন , দিনাজপুর প্রতিনিধি ॥ আগস্ট মাস বাঙালি জাতির জীবনে শোকের মাস। ১৫ আগস্ট গভীর শোকাবহ একটি দিন, জাতীয় শোক দিবস। ১৯৭৫ সালের এ দিনে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী চক্র নৃশংসভাবে হত্যা করেছে ইতিহাসের মহানায়ক, শত সহস্র বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাঙালির জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। হত্যা করেছে মহিয়সী নারী, জাতির পিতার প্রিয় সহধর্মিনী, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের চালিকাশক্তি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব, জাতির পিতার প্রিয় সন্তান বীরমুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু রাসেলসহ বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ২৬ জন নিকটাত্মীয়কে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকীতে এবং জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ খ্রী. যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে মাসব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)। এসব কর্মসূচীর অংশ হিসেবে শোকাবহ আগস্টের প্রথম দিনে (১ আগস্ট-২০২৩) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান এর নেতৃত্বে ভিআইপি কনফারেন্স রুমে জাতীয় দিবস পালন কমিটির সদস্যবৃন্দ, ডীন, পরিচালক, হল সুপারসহ অন্যান্য শিক্ষক-কর্মকর্তাবৃন্দ কালো ব্যাজ ধারণ করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ডিজিটাল কালো ব্যাজ প্রদর্শন ও ভাইস-চ্যান্সেলর কর্তৃক শোক বার্তা প্রকাশ করা হয় এবং সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে ব্যানার স্থাপন করা হয়।
দুপুর সাড়ে ১২টায় বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা হল প্রশাসনের নেতৃত্বে নিজ নিজ হলে কালো ব্যাচ ধারণ করেন। শোক বার্তায় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে ঘাতকদের হাতে শাহাদত বরণকারী জাতির পিতার পরিবারের অন্যান্য শহীদদের। তিনি বলেন, ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট নরপিশাচরূপী খুনিরা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে দীর্ঘ ২১ বছর বাঙালি জাতি বিচারহীনতার কলঙ্ককের বোঝা বহন করতে বাধ্য হয়। ১৯৯৬ সালে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে এ বিচারের উদ্যোগ নেয়া হয়। নিয়মতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি ঘাতকদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়।
এছাড়াও মাসব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতা (১ আগস্ট থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগে জমা দেয়া যাবে)। ৮ আগস্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব- এঁর শুভ জন্মদিন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব হল কর্তৃক শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন ও দোয়া মাহফিল, ০৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে স্ব স্ব অনুষদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর জীবনভিত্তিক বক্তৃতা প্রতিযোগিতা।
১৫ আগস্ট যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনব্যাপী জাতীয় শোক দিবস পালন, ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার স্মরণে মেডিক্যাল সেন্টারে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, ২৫ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত গ্রন্থ অবলম্বনে কুইজ প্রতিযোগিতা এবং শোকাবহ আগস্ট স্মরণে।

পোস্টটি শেয়ার করুনঃ