হিন্দুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে যশোর ৯৬ অঞ্চলে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ
আপডেটঃ আগস্ট ১১, ২০২৪ | ৯:৫৩
120 ভিউ
স্টাফ রিপোটারঃ জাগো জাগো নিজে জাগো স্লোগানে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ সমাবেশ।
হিন্দুদের ঘরবাড়ি, উপাসনালয় ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের প্রতিবাদে যশোরের অভয়নগরে প্রতিবাদ সমাবেশ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
আজ রোববার বিকেলে উপজেলার মশিয়াহাটী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। মশিয়াহাটী আঞ্চলিক দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটি এ কর্মসূচির আয়োজন করেন। যশোরের অভয়নগর ও মনিরামপুর উপজেলার ৯৬ অঞ্চল নামে পরিচিত হিন্দু অধ্যুষিত ৯৬ গ্রামের সাধারণ হিন্দু সম্প্রদায়ের দুই সহস্রাধিক মানুষ কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করেন।
সনাতনীর ওপর আক্রমণ, মানি না মানব না’, ‘জাগো জাগো নিজে জাগো, নিজের জন্মস্থান নিজে রক্ষা করো।’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। কর্মসূচিতে ব্যাপক সংখ্যক নারী অংশগ্রহণ করেন।
বিকেল চারটা থেকে সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত মানববন্ধন হয়। এ সময় এক প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল হয়।
মনিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের(ইউপি) চেয়ারম্যান ও মশিয়াহাটী আঞ্চলিক দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শেখর চন্দ্র রায় প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। এসব কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা দেশের বিভিন্ন স্থানে বাড়িঘরে, মন্দিরে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটের প্রতিবাদে মিছিলে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তাঁরা সরকার ও প্রশাসনের কাছে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা দাবী করে।
সমাবেশে বাংলাদেশ পুজা উৎযাপন পরিষদ যশোর জেলার সভাপতি দীপংকর দাস রতন বলেন, কোন সরকার কোন হিন্দু হত্যার বিচার করেনি। বিচার না করার কারণে আজ হিন্দুদের ঘরবাড়ি, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট হচ্ছে। সরকার বিচার করবেন না। আমাদের নিজেদের অধিকার নিজেরাই আদায় করে নিতে হবে। আমরা এদেশের বাসিন্দা, কোন অবস্থাতেই আমরা এদেশ ত্যাগ করবো না।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, যেভাবে হিন্দুদের ঘরবাড়ি, মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের হচ্ছে, তা দেখে তাঁরা রীতিমতো স্তম্ভিত। সরকারের দায়িত্ব তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তাঁরা এ দেশেরই নাগরিক। এই দেশেই তাঁদেরও নিরাপদে বাঁচার অধিকার আছে। কিন্তু আজ তাঁদের কোনোই নিরাপত্তা নেই। তাঁরা আজ নিজ ভূমে পরবাসী।
সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ঘোষ বলেন, নিজেদের জানমাল আর সম্ভ্রম রক্ষায় আমরা কয়েক দিন ধরে দিন-রাত পাহারা দিয়ে যাচ্ছি। সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দোষীদের দ্রততম সময়ে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান, ক্ষতিগ্রস্তদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন এবং হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীত করতে হবে।
প্রতিবাদ সমাবেশে যশোর জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সহসভাপতি জয়ন্ত বিশ্বাস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রতন আচার্য্য, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হরিদাস মজুমদার, প্রদীপ বিশ্বাস, মদন মোহন চক্রবর্তী, তৃপ্তি রানী বৈরাগী প্রমুখ বক্তব্য দেন।