সাভার উপজেলা প্রতিনিধি:
সাভারে ইটালি প্রবাসী স্বামীকে নিঃস্ব করে ব্যাংক ম্যানেজারের সাথে পালালেন স্ত্রী।
সাভারে পরকীয়ার বলি হয়ে এক ইটালি প্রবাসীর জীবন এখন দুর্বিষহ। জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত আর অনিশ্চয়তার চোরাবালিতে পড়ে আজ তিনি নিঃস্ব। ঘটনাটি ঘটেছে সাভার পৌরসভার পূর্ব মজিদপুর এলাকায়। ইটালি প্রবাসী এ কে ফজলুল হকের স্ত্রী লাবনী হক পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে সাভার রূপালী ব্যাংকের সাবেক ম্যানেজর ওমর ফারুকের হাত ধরে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছে। সাথে প্রবাস থেকে স্বামীর পাঠানো সর্বস্বও হাতিয়ে নিয়েছে। টাকা-পয়সা, মূল্যবান স্বর্ণালংকারসহ জীবনের সঞ্চিত সবকিছু হারিয়ে প্রবাসী ফজলুল হক এখন দিশাহারা। সেই সাথে প্রতারণা করে তার শেষ সম্বল মজিদপুর এলাকায় একটি দোতলা বাড়িও তার নামে লিখে নিয়েছেন। এঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযুক্ত গৃহবধূর নাম লাবনী হক(৪২)। তিনি মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার সরাইল এলাকার এ কে ফজলুল হকের স্ত্রী । ওই দাম্পতির মাহফুজ হক তন্ময় (২২) ও হাবিবুল হক ফাহিম (১৮) নামে পুত্র সন্তান রয়েছে। এদিকে সাভার রূপালী ব্যাংক (বাজার রোড) শাখার সাবেক ম্যানেজর ওমর ফারুক  জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি থানার পলিশা গ্রামে গাজিউর রহমানের ছেলে। তারও স্ত্রী সন্তান রয়েছে বলে জানাগেছে।

আত্মীয় ও স্থানীয়রা জানাযায়, প্রবাসী ফজলুল হক ২৪ বছর আগে লাবনী হকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাদের সংসার ভালো চলছিলো। তিনি প্রতি বছর ইটালী থেকে একবার দেশে আসতেন পরিবারকে সময় দিতে। তাদের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তাদের স্বামী স্ত্রীর মাঝে সম্পর্ক গভীর ছিলো। স্ত্রীর কোন অভিযোগ ছিলো না। এরই মধ্যে গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে লাবনী হক ও তার প্রেমিক ওমর ফারুকে মজিদপুরের বাায় অনৈতিক কাজ করার সময় এলাকার লোকজন তাদেরে হাতেনাতে ধরে ফেলে। পরে তারা বিবাহিত দাবি করলে উপস্থিত সবাই কাবিন নামা দেখতে চাইলে তারা কাবিন নামা দেখাতে পানেনি। পরে স্থানীরা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ তাদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে জান।

প্রবাসী ফজলুল হক জানান, তার বিয়ের বয়স ২৪ বছর এবং আমার দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের এতো বছর পর এসে ব্যাংকে লেনদেন করতে গিয়ে সাভার রূপালী ব্যাংকের (বাজার রোড শাখা) সাবেক ম্যানেজর ওমর ফারুকের সাথে পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পরে।
এরআগে আমি স্ত্রীর নামে সাভার পূর্ব মজিদপুরে ২০১৭ সালে পাটনারে একটি ২য়তলা পাকা বাড়ী কিনি। আর্থিক সমস্যার কারনে আমি রূপালী ব্যাংক সাভার শাখা থেকে লোন নিয়ে ছিলাম। ২০২২ সালের শেষের দিকে বাড়ীর পার্টনারের সাথে সমস্যা হওয়ায় বাড়ীর বাকী অংশ নেওয়ার জন্য আমার স্ত্রী চাপ দিলে আমি অপরাগতা প্রকাশ করি এবং আমার নিকট টাকা নাই জানাই। আমার স্ত্রী জানায় সে রূপালী ব্যাংক হতে ২০/২৫ লক্ষ টাকা লোন নিতে পারবে। ব্যাংকে আমার স্বাক্ষর লাগবে সমস্যা দেখিয়ে এবার ও বাড়ীর সবটুকু দলিল প্রতারনা করে তার নিজ নামে করে নেয় যা আমার জানা ছিলো না।
পরে জানতে পারি আমার স্ত্রীর দীর্ঘদিন ধরে রূপালী ব্যাংকের (সাভার বাজার রোড শাখা) সাবেক ম্যানেজারের সাথে সম্পর্কের কথা। এসব বিষয় জানার পর থেকে আমি ওই ব্যাংকের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের বরাবর অভিযোগ করেছি।

এছাড়াও প্রবাসী ফজলুল হকের ছোট ছেলে লাবিবুল হক ফাহিম তার মায়ের পরকীয়া সম্পর্কে আসক্তসহ অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার বিষয়ে সাভার মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সেই সাথে মায়ের অবৈধ পরকিয়া সম্পর্ক ও অবৈধ বিয়ের সত্যায়িত কাবিন নামা চাওয়া প্রসঙ্গে স্থানী জনপ্রতিনিধিদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এছাড়াও ওই অভিযোগে তাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন।

সুশীল সমাজ এঘটনাকে চরম সামাজিক অবক্ষয় হিসেবে দেখছেন। তারা মনে করেন এধরনের ঘটনায় যথাযথ কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থ নেওয়া। তা না হলে সমাজ এধরণের ঘটনা বাড়বে। সে সাথে প্রবাসীরা তাদেরর পরিবারের নারী সদস্যদের দিয়ে ব্যাংকিং লেনদেন অস্থা হারাবে। এ জন্য ওই ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কতৃপক্ষ দ্রুতই ব্যবস্থা নিবে এমনটি প্রত্যাশা তাদের।

পোস্টটি শেয়ার করুনঃ