জ্যৈষ্ঠ প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার তালা উপজেলার বালিয়াদহ থেকে দহাখাল সংযোগকারী গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশার কারণে দুর্ভোগে জনসাধারণ। গ্রামীণ সড়কটি উপজেলার ৮নং মাগুরা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বিষুকাটী থেকে বালিয়াদহ কে এম এস সি কলেজিয়েট ইনস্টিটিউটকে সংযোগ স্থাপন করেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে,দেড় কিলোমিটার সড়কের ইটের সলিং যেখানে সেখানে উঠেছে গেছে। কোথায় সড়ক ভেঙে পুকুরের মধ্যে পড়েছে। ফলে সংকুচিত সড়কে সাইকেল,মটর সাইকেল,ইজিবাইক সহ গ্রামীণ জনপদের সব থেকে বেশি ব্যবহৃত নছিমন ও করিমন চলতে পারছে না। একটি নছিমন ঢুকলে পাশ দিয়ে যাতায়াতকারী সাইকেল আরোহীকে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়। চলতি বোরো মৌসুমে ধান তুলতে ব্যাপক সমস্যায় ভুগেতে হয়েছে বলে এলাকাবাসীরা জানান।

সম্প্রতি সড়কটির কোল ঘেঁষে নির্মিত হচ্ছে একটি জামে মসজিদ। মসজিদের কাজে ব্যবহৃত ৮০ বস্তা সিমেন্ট বহনকারী ট্রলি গ্রামীণ সড়কটির পাশে অবস্থিত পুকুরে পড়ে যাওয়া। এই দুর্ঘটনা কেউ হতাহত না হলেও প্রায় অর্ধেক সিমেন্ট ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মধ্য পাড়া জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি মোল্লা মোজাম হোসেন।

বালিবহন কারী এক নছিমন চালক আলামিন বিশ্বাস  বলেন,সড়কের এমন অবস্থা দাড়িয়েছে যে হেঁটে চলতে গেলে মানুষ হোঁচট খেয়ে পড়ে যায়। আর আমরা যেকোনো সময়ে দুর্ঘটনায় পড়তে পারি। সারাদিনে যেখানে পাঁচ বার ক্ষ্যাপ দিতে পারি সেখানে আমরা দুই থেকে তিনটে ক্ষ্যাপ দিতে পারি। এর ফলে একদিকে আমাদের সময় নষ্ট হয় অন্যদিকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই।

কৃষক শাহনাজ বিশ্বাস বলেন,আমি ১৫ বিঘা জমিতে ইরি ধান লাগিয়ে ছিলাম। ১২ বিঘা জমির ধান বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করে বাড়িতে আনতে হয়েছে। বাকি ধান জমিতে এখনও আছে। এই বৈশাখের বৃষ্টিতে বাকি ধান আনতে পারছিনা। এখন দিগুণ খরচ করে আমাকে এই ধান আনতে হবে। সেই সাথে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। গ্রামীণ সড়কটি চলাচলের উপযোগী থাকলে এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হত না।

ফানিচার ব্যবসায়ী শেখ আশরাফুল হক বলেন,ফার্নিচারের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ, কাঠ আনা নেওয়া সমস্যা হয়। সেই সাথে তৈরিকৃত বিভিন্ন ধরনের ফার্নিচার সময় মত ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে আমরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন বলেন,বিভিন্ন দপ্তরে ঘোরাঘুরি করে কোন লাভ হচ্ছে না। প্রায় বছর দুয়েক আগে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সড়কটি জন্য একটি আই ডি খোলা হয়ে ছিল। যার আই ডি নং-২৮৭৯০৫০২৭। কিন্তু আজও পর্যন্ত কোন ফলাফল পাওয়া যায় নাই।

তালা উপজেলা প্রকৌশলী রবীন্দ্রনাথ হালদার সাথে এ বিষয়ে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নাই।

এমতাবস্থায় আসন্ন বৃষ্টি মৌসুমে দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পাবে। সার্বিক বিবেচনায় চলাচলের অনুপযোগী গ্রামীণ সড়কটি সংস্কারের জন্য এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

পোস্টটি শেয়ার করুনঃ