ফরহাদ হোসেন নীলয় সাতক্ষীরা দেবহাটা প্রতিনিধি:

দেবহাটায় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের কারনে বাস্তুচ্যুত হতে বসেছে তিনটি অসহায় ও হতদরিদ্র পরিবার। কয়েক যুগ ধরে এসব পরিবার গুলো দেবহাটা বিজিবি ক্যাম্পের দক্ষিণে বাংলাদেশ-ভারত আন্ত:সীমান্ত নদী ইছামতির বেড়িবাঁধে বসবাস করলেও, বর্তমানে তাদের বসতভিটা দখলে নিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন দেবহাটা বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা। কিছুদিন ধরেই উচ্ছেদ আতঙ্ক মাথায় নিয়ে দিন কাটছে পরিবার গুলোর। তারা উচ্ছেদের আগে উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বিজিবি ক্যাম্পের জমি মাপ-জরিপের আকুতি জানিয়ে আসলেও বিজিবি কর্তৃপক্ষ তাতে কর্ণপাত করছেনা বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দেবহাটা বিজিবি ক্যাম্পের চলমান প্রাচীর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে সরকারি সার্ভেয়ারের মাধ্যমে জমি মাপ-জরিপের নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) দীপা রানী সরকার। ভুক্তভোগী দেবহাটা সদরের মৃত মহিম গাজির ছেলে সত্তরোর্ধ বৃদ্ধ মাদার গাজি বলেন, ‘পরিবার পরিজন নিয়ে জীবনের বেশিরভাগ সময়ই কাটিয়েছি ইছামতির নদীর বেড়িবাঁধের নিচে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে এই বাড়িটিতে। আমরা ভূমিহীন হওয়ায় বর্তমানে ওই জমিতেই আমি ও আমার ছেলে-মেয়ে মিলিয়ে পৃথক তিনটি পরিবার বসবাস করছে। কিছুদিন আগেই ক্যাম্পের চারপাশে পাঁকা সীমানা প্রাচীর নির্মাণ শুরু করেছে দেবহাটা বিজিবি। কিন্তু রেকর্ডিয় জমির বাইরে আমাদের বসবাসরত পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিও দখলে নিতে চাইছে বিজিবি কর্তৃপক্ষ। আমরা দেবহাটা বিজিবি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার আব্দুল লতিফ ও হাবিলদার সেকান্দার আলীকে জমি মাপ-জরিপ করে প্রাচীর নির্মাণের জন্য বারবার অনুরোধ করলেও, তারা তাতে কর্ণপাত না করে আমাদের বাড়িঘর ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে আসছেন। বাধ্য হয়ে আমরা বিষয়টি দেবহাটা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্যকে অবহিত করে সহযোগিতা চেয়েছি।’ বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে ‘উন্নয়ন কাজের জন্য সরকারি জমি থেকে পরিবার গুলোকে সরে যেতে বলা হয়েছে’ বলে সাতক্ষীরার নীলডুমুর ১৭ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে। সহকারি কমিশনার (ভূমি) দীপা রানী সরকার বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশনা মোতাবেক অমিমাংসিত জমিতে আপাতত বিজিবি’র প্রাচীর নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। আগে সরকারি সার্ভেয়ার দ্বারা জমি মাপ-জরিপ করে দেখা হবে যে ওই পরিবার গুলো বিজিবি’র জমিতে বসবাস করছে, না-কি পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে বসবাস করছে; তারপর পারবর্তী সিদ্ধান্ত দেয়া হবে। যদিও ওই জমি থেকে তাদেরকে উচ্ছেদ করা হয়, সেক্ষেত্রে তাদের পূনর্বাসনে অবশ্যই উদ্যোগী থাকবে উপজেলা প্রশাসন।’

পোস্টটি শেয়ার করুনঃ