মোঃ আরিফুল হাসান, ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি

ফরিদপুরে অটোভ্যান ছিনিয়ে নিতেই হত্যা করা হয় ভ্যান চালক হারুন অর রশিদকে। হত্যাকাণ্ডের দুই মাস পর জড়িত তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম।
পুলিশ সুপার জানান, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ফরিদপুর সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের চর গজারিয়া এলাকার পদ্মা নদী সংলগ্ন মেহগনি বাগানের মধ্যে একটি অজ্ঞাতপরিচয় মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং মরদেহ সনাক্তের চেষ্টা করে। পরবর্তীতে রহিমন বেগম সনাক্ত করেন যে মরদেহটি তার স্বামী হারুন অর রশিদের।

এ ঘটনায় ভ্যানচালক হারুন অর রশিদের স্ত্রী রহিমন বেগম অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় একটি ছিনতাইসহ হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত ভ্যানচালক জেলার নগরকান্দা উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের দুলারডাঙ্গি আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করতেন। সাদিয়া আক্তার নামে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া একটি মেয়ে রয়েছে তার।

নিহত ভ্যানচালক হারুন অর রশিদের স্ত্রী রহিমন বেগম জানান, ঘটনার দিন বিকেলে বাড়ি থেকে ভ্যান নিয়ে বের হন তার স্বামী। সন্ধ্যার মধ্যেই তার স্বামী প্রতিদিন ফিরে আসেন। কিন্তু ওই দিন সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেননি। রাত ১০ টা থেকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরদিন সকালে স্থানীয়দের কাছে জানতে পারেন সাইনবোর্ড এলাকায় মেহগনি বাগানের মধ্যে একটি মরদেহ পরে রয়েছে। সেখানে এসে দেখতে পান মরদেহটি তার স্বামীর।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করি। নিজেদের কোনো ভ্যান ছিল না। আমার স্বামী ভ্যান ভাড়া নিয়ে চালাতেন। প্রতিদিন ২শ’ টাকা ভাড়া দিতে হতো। আমার সব শেষ হয়ে গেছে। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে চলবো কিভাবে। আমার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে, তাদের বিচার দাবি করি।’

বুধবার (১৭ এপ্রিল) দিনগত রাতে চরভদ্রাসন উপজেলার রমেশ বালার ডাঙ্গী গ্রামে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সাইদুল শেখকে (১৭) গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যানুসারে ঘটনার সঙ্গে জড়িত একই এলাকার অপর আসামি লিটন মন্ডল ওরফে রুবেল (২৪) ও রুমান মন্ডল (১৭) কে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। আসামি সাইদুল শেখের বাড়ি থেকে মোবাইল ও রোমান এর বসতবাড়ি থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ১টি লোহার পাতের চাকু উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গজারিয়া বাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে সাইনবোর্ড যাওয়ার কথা বলে ১৫০ টাকা ভাড়া ঠিক করে হারুন অর রশিদের ভ্যানে ওঠে সাইদুল, লিটন ও রুমান। সাইনবোর্ড পৌঁছামাত্রই ভ্যানচালক হারুন অর রশিদের মাথায় আঘাত করে তাকে হত্যা করে ওরা তিনজন। মূলত অটোভ্যানটি ছিনিয়ে নিতেই ভ্যানচালক হারুন অর রশিদ কে হত্যা করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।

পোস্টটি শেয়ার করুনঃ